বয়স বাধা হয়নি। শেষ পর্যন্ত এইচএসসি পাস করেছেন খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা উপজেলার তাইন্দং ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম। পরীক্ষায় বসা থেকে আলোচনায় ছিলেন তিনি। সাবেক এই চেয়ারম্যানের ফল শোনার আগ্রহের কমতি ছিল না ইউনিয়নবাসীর।
অবশেষে আজ রবিবার সেই প্রতীক্ষার অবসান ঘটে। চট্টগ্রাম বোর্ড থেকে প্রকাশিত ফলে তিনি পাস করেছেন।
তাঁর সঙ্গে এবারের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন তাঁর এক ছেলে এবং এক মেয়ে। এখানেই শেষ নয়, বড় মেয়ের ছেলেও (নাতি) পরীক্ষা দেন নানা সিরাজুলের সঙ্গে। ছেলে-মেয়ে এবং নাতির সঙ্গে পরীক্ষায় পাস করায় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ভাসছেন প্রশংসায়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সিরাজুল ইসলামের ছয় মেয়ে এবং এক ছেলে। এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় ছোট মেয়ে মাহমুদা সিরাজ খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজ থেকে মানবিক বিভাগ থেকে পেয়েছেন জিপিএ ৪.১৭।
একমাত্র ছেলে হাফেজ নেসার উদ্দিন আহম্মেদ চট্টগ্রাম বাইতুশ শরফ কামিল মাদরাসা থেকে আলিম পরীক্ষায় অংশ নেন। তিনিও মাদরাসা বোর্ড থেকে জিপিএ ৪ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন। সিরাজুল ইসলামের বড় মেয়ের ছেলে (নাতি) নাজমুল হাসান খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজ থেকে মানবিক বিভাগে জিপিএ ৪.৬৭ পেয়ে পাস করেছেন।
তবে বড় চমক সিরাজুল ইসলাম নিজেই। তিনি খাগড়াছড়ি ইসলামিয়া সিনিয়র আলিম মাদরাসা থেকে আলিম (প্রাইভেট) পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলেন। সিরাজুলের প্রাপ্ত জিপিএ ২.১৪। এতেই খুশি তিনি এবং তাঁর পরিবার।
এই বয়সে কেন পরীক্ষা দিলেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত শিক্ষার বয়স। আমার আগ্রহ ছিল বলেই পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছি। আমাকে দেখে অন্যরাও উৎসাহ পাবে, এই ভাবনা থেকে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছি। ‘
পেশায় ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘শিক্ষার বিকল্প নেই। যত বয়স হোক জ্ঞান অর্জন করে নিজে ও দেশকে সমৃদ্ধ করা সম্ভব। ‘
সিরাজুল ইসলাম ১৯৯২ থেকে ৯৭ পর্যন্ত মাটিরাঙ্গার তাইন্দং ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ছিলেন। পরে ২০০৩ থেকে ২০১১ পর্যন্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।